৳ 300.00
৳300.00
1 KG
বাংলার মিষ্টির রাজ্যে চাঁদপুরের নাম আসে এক অনন্য মর্যাদায়। নদীমাতৃক এই জেলার প্রকৃতি যেমন অপার সৌন্দর্যের উৎস, তেমনি এর মানুষের হাতে তৈরি মিষ্টান্নও সুস্বাদের অনন্য নিদর্শন। আর সেই স্বাদের তালিকায় সবচেয়ে বিশেষ স্থানটি দখল করে আছেচাঁদপুরের ছানার পায়ে।
চাঁদপুরের ছানার পায়েসের মূল রহস্য লুকিয়ে আছে এর দুধ ও ছানায়। এখানকার গরুর দুধ স্বাভাবিকভাবেই ঘন ও সুগন্ধি, যা দিয়ে তৈরি করা হয় নরম, সাদা, তুলতুলে ছানা। প্রথমে দুধকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে নাড়তে হয়—এতে দুধ ঘন হয়ে ক্রিমি টেক্সচার নেয়। এরপর ফুটন্ত দুধে যোগ করা হয় টাটকা ছানা, চিনি, এলাচ আর কখনও একটুচুলার নিচে আগুনের আঁচ, আর উপর দিয়ে ঘন দুধে ভাসতে থাকা ছানার টুকরো — যেন মিষ্টির ক্যানভাসে শিল্পীর তুঘ্রাণে ভরে ওঠে ঘরযখন পায়েস তৈরি হয়, পুরো রান্নাঘর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে দুধ আর এলাচের মিষ্টি ঘ্রাণ। মনে হয় যেন চাঁদপুরের বাতাসও সেই ঘ্রাণে মাতোয়ারা হয়ে যায়। ছোট-বড় সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে কখন ঠান্ডা হবে আর কবে প্রথম চামচটি মএক চামচ মুখে দিলে দুধের কোমলতা, ছানার দানার নরম স্পর্শ আর এলাচের হালকা ঝাঁজ মিলেমিশে তৈরি করে এক স্বর্গীয় অনুভূতি।উৎসবের অপরচাঁদপুরে কোনো বিয়ের দাওয়াত, ঈদ, পূজা কিংবা জন্মদিন—ছানার পায়েস ছাড়া যেন অসম্পূর্ণ। অনেকে এখনো পরিবারের বয়স্কদের রেসিপি ধরে রাখে, যেন সেই পুরনো স্বাদ হারিয়ে না যায়। শহরের বিখ্যাত মিষ্টির দোকানগুলোতেও এই পায়েসের কদর কম নয়; অনেকেই দূর দূরান্ত থেকে শুধু এই পায়েসের স্বাদ নিতেঐতিহ্য থেচাঁদপুরের ছানার পায়েস শুধু একটি রেসিপি নয়, বরং এক আবেগ, এক স্মৃতি, এক পরিচয়। মায়ের হাতে বানানো গরম ছানার পায়েসের স্বাদ অনেকের শৈশবের অংশ। সময় বদলেছে, কিন্তু এই পায়েসের প্রতি ভালোবাসা বদলায়নি—বরং আরও গভীর হয়েছে।
এটি আমাদের শেখায়, ঐতিহ্য মানে শুধু ইতিহাস নয়; এটি ভালোবাসা, যত্ন আর স্বাদের মাধ্যমে গড়ে ওঠা এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধন।
চাঁদপুরের ছানার পায়েস আজও প্রমাণ করে—মিষ্টির মধ্যেও লুকিয়ে থাকতে পারে ইতিহাস, সংস্কৃতি আর মানুষের হৃদয়ের টান। এক বাটি ছানার পায়েস মানে শুধু মিষ্টি নয়, এক চুমুক ভালোবাসা, এক চামচ স্মৃতি, আর এক ভরপুর চাঁদপুরের গর্ব।